পারিবারিক পুজো হয়েছে সর্বজনীন,
গুমায় মণ্ডলদের মনসা পুজোয় বিপুল জনস্রোত
ওয়েব ডেস্ক ঃ একসময় পারিবারিক উদ্যোগে নিজেদের বাড়িতে মনসা পুজো শুরু করেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গুমার হেলিয়াডাঙ্গা গ্রামের ভাস্কর মণ্ডলদের পূর্বসূরীররা। প্রজন্মের পর প্রজন্মের হাত ধরে এই পুজোর বয়স প্রায় ২০০ বছর হয়েছে। বাড়িতেই দেবী মনসার মন্দির।ক্রমেই সেই মন্দিরের বার্ষিক পুজো সর্বজনীন হয়ে উঠেছে।এখানে দেবী মনসা জাগ্রত এই বিশ্বাসে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে লোকজন আসার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষজন পুজো দিতে ছুটে আসছেন গুমায়।তাদের মনোস্কামনা পূরণ করার জন্য দেবীর কাছে প্রার্থনা করছেন।শতাধিক নারী-পুরুষ দন্ডি কাটছেন। মায়ের কাছে মানত করে ধুনোপোড়া দিচ্ছেন। ভাদ্র মাসের শেষদিনে এই মন্দিরে ভিড় করছেন।
এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সোমবার ছিল ভাদ্র মাসের শেষ দিন। এদিন হেলিয়াডাঙ্গা গ্রামে ভাস্কর মণ্ডলদের মনসা মন্দির ঘিরে জনস্রোত দেখা গিয়েছে।জানা গিয়েছে, কয়েক প্রজন্ম ধরে কবিরাজি পদ্ধতিতে প্যারালাইসিস, আর্থারাইটিস, স্পন্ডেলাইসিস রোগের চিকিৎসা করে সুনাম অর্জন করেছেন মণ্ডল পরিবারের সদস্যরা।মণ্ডলদের দাবি, মা মনসার আর্শীবাদে এইসব জটিল রোগের সফল ভাবে চিকিৎসা করছেন তাঁরা।মানুষ রোগের থেকে মুক্তি পেয়েছেন। আর লোকমুখে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে হেলিয়াডাঙ্গার এই মন্দির। তাই ভাদ্র মাসের শেষ দিনে বার্ষিক পুজোয় এখানে লাখখানেক মানুষের সমাগম হয়। ভাস্কর মণ্ডল এদিন জানান, মূলত তাঁরা ৫ ভাই পারিবারিক উদ্যোগে পুজোর আয়োজন করলেও গোটা গ্রামের লোকজন সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করেন। বিপুল কর্মযজ্ঞ শান্তিপূর্ণ ভাবেই শেষ হয়। তিনি আরও জানান, এই মন্দিরে যে কোনও জাতি ধর্মের মানুষের পুজো দেওয়ার অধিকার রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে একজন মুসলিম ভক্ত এই পুজোয় দশকর্মার পুজো উপকরণ সরবরাহ করেন বলেও জানান তিনি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মানুষের ভিড় থাকে। প্রত্যেককে ভোগের প্রসাদ দেওয়া হয়।উল্লেখ্য, এই মন্দিরের একপাশে রয়েছে রাধাগোবিন্দ মন্দির ও অন্যপাশে শিবমন্দির।এরমধ্যে প্রাচীন জনপদ হেলিয়াডাঙ্গা গ্রামে মনসা পুজো ঘিরেই উন্মাদনা বেশি।এদিন এই পুজো উপলক্ষে মেলা বসে। আর সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় মনসা পালা।রাতভর চলে সে অনুষ্ঠান।