ওয়েব ডেস্ক : বীরভূমে সতীপীঠ নলাটেশ্বরী ও কঙ্কালীতলা কালীমন্দির বা তারাপীঠ কালীমন্দির দর্শনের পাশাপাশি দেখে আসতে পারেন আকালিপুরের আকালি মা গুহ্যকালী মন্দির।বীরভূমের আকালি কালী মা বিশেষ প্রসিদ্ধ। যদিও কালীমাতার এই মন্দিরে কালীপুজোর দিন কোনও বিশেষ পুজোর রীতি নেই। প্রতিদিনই আকালি মা গুহ্য কালীকে পুজো দেওয়া হয়। কথিত আছে যে, কালীপুজোর অমাবস্যার নিশি রাতে মা গর্ভগৃহের বাইরে এসে নৈশলীলা করেন। ফলে ওইদিন ভক্তদের ভিড় হলে মায়ের নৈশলীলায় বাধা পড়বে। তাই কালীপুজোর রাতে আকালি গুহ্যকালী মায়ের বিশেষ কোনও পুজো হয় না।
বীরভূমের নলহাটি শহর থেকে কিছুটা দূরত্বে আকালিপুরে একটি ফাঁকা মাঠে মা গুহ্যকালীর মন্দির। জানা যায়, ১৭৭৫ সালে মহারাজ নন্দকুমার এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এখন পোড়ো বাড়ির মতো দেখতে ওই মন্দির। সামনে গেলেই গা ছমছম করবে। গ্রামের নাম আকালিপুর হওয়ায় এই মন্দিরের দেবী আকালি কালী নামে পরিচিত। এই মন্দির এবং মাকালীকে নিয়ে নানা কথা প্রচলিত রয়েছে। স্থানীয়দের থেকে জানা গিয়েছে, একসময় ডাকাতেরা আকালি মা-কে পুজো করে ডাকাতি করতে বেরোতেন। বহু মানুষ বিশ্বাস করেন যে, আকালি মায়ের পুজো দিয়ে কোনও প্রার্থনা করলে তা পূরণ হয়। ফলে বহু জায়গা থেকে ভক্তরা আকালি কালী মন্দিরে পুজো দিতে আসেন।
নিত্যদিন পুজো হয় এই মন্দিরে। আর কার্তিক মাসে কালীপুজোর অমাবস্যা নিশিতে সব কালীমন্দিরে মায়ের বিশেষ পুজো হলেও এখানে মায়ের কোনও পুজো হয় না। রোজ যেভাবে পূজো করা হয়, এদিনও সেভাবে পুজো করে সন্ধ্যারতির পর মাকে শুইয়ে দেওয়া হয়। কথিত আছে, এদিন গভীর রাতে মা নৈশলীলায় বেরিয়ে পড়েন।উল্লেখ্য, আকালিপুরের এই মন্দিরে গুহ্যকালীর বিশেষ পুজো হয় দুর্গাপূজার পর চতুর্দশীর দিন এবং পৌষ সংক্রান্তির দিন। সেই পুজোয় মন্দির চত্ত্বরে লাখ-লাখ দর্শনার্থীর ভিড় হয়। মন্দিরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রাহ্মণী নদীতে স্নান করে ওই দু-দিন আকালি মায়ের পুজো দিলে মনের কামনা পূরণ হয় বলে ভক্তরা বিশ্বাস করেন। এই দুটি দিন ছাড়াও মাঘ মাসে রটন্তী কালীপুজোর দিন মায়ের প্রতিষ্ঠা দিবস। ফলে সেই দিনও গুহ্যকালী মায়ের বিশেষ পুজো উপলক্ষে মন্দিরে হাজার-হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হয়।
ছবি TINKU SAHA অশোকনগর