ওয়েব ডেস্ক : ছুটির দিনে সপরিবারে দেখে আসুন পাখি, প্রজাপতি ও মাকরসা-সহ বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদের আবাস চিন্তামনি কর বার্ড স্যাংচুয়ারি। পাখির এই অভয়ারণ্য কয়ালের বাগান নামেও পরিচিত। যদিও বন্যপ্রাণী প্রেমীদের কাছে এই অভয়ারণ্য পরিচিত চিন্তামনি কর বার্ড স্যাংচুয়ারি বা বিকেবিএস নামে। কলকাতার কাছেই এই অভয়ারণ্য বিখ্যাত বিভিন্ন ধরনের পাখি, প্রজাপতি, ফার্ন এবং অর্কিডের জন্য। মূলত একটি বড়ো আম বাগান ছিল কয়ালের বাগান। ১৯৮২ সালে এই বাগানকে অভয়ারণ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়। এটিকে জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ২০০৫ সালের অক্টোবরে সরকার এই বাগান অধিগ্রহণ করে। ২০০৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর এই বাগানের নামকরণ করা হয় নরেন্দ্রপুর বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এবং ২০০৫ সালের ২১ অক্টোবর এটির নামকরণ করা হয় চিন্তামনি কর পাখি অভয়ারণ্য। কারণ, বিখ্যাত ভাস্কর চিন্তামণি কর কয়ালের বাগানকে অভয়ারণ্য মর্যাদা দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে নিরলসভাবে লড়াই করেছিলেন।
চিন্তামনি কর বার্ড স্যাংচুয়ারিতে অ্যাশি ড্রঙ্গো, এশিয়ান কোয়েল, ব্রাউন ফিশ পেঁচা,
কালো ড্রঙ্গো, শিকরা, ভারতীয় পুকুরের হেরন,
ব্রোঞ্জড ড্রোঙ্গো, ক্যাটল এগ্রেট, স্কেলি-ব্রেস্টেড মুনিয়া, লিটল এগ্রেট, লিটল কর্মোরান্ট,
হোয়াইট ওয়াগটেল, এশিয়ান গ্রিন বি-ইটার, হাউস ক্রো, লার্জ-বিলড ক্রো, রুফাস ট্রিপি, হোয়াইট-থ্রোটেড কিংফিশার, স্টর্ক-বিল্ড কিংফিশার, ফুলভাস-ব্রেস্টেড কাঠঠোকরা, রুফাস কাঠঠোকরা, স্ট্রিক-থ্রোটেড কাঠঠোকরা, সাধারণ পান্না ঘুঘু,
দাগযুক্ত ঘুঘু, ভারতীয় স্বর্গ ফ্লাইক্যাচার, ওরিয়েন্টাল ম্যাগপি-রবিন, অলিভ-ব্যাকড সানবার্ড, ব্ল্যাক-হুডেড অরিওল, সিনারিয়াস টিট, চেস্টনাট-লেজ স্টারলিং, লাল-ভেন্টেড বুলবুল, ওরিয়েন্টাল হোয়াইট আই, হোয়াইট-থ্রোটেড ফ্যানটেল পাখি দেখা যায়। পাশাপাশি, এই অভয়ারণ্যে গার্ডেন স্পাইডার বা সিগনেচার স্পাইডার, ইমিটেশন স্পাইডার, গ্রাস জুয়েল স্পাইডার, লাগালাইসির গার্ডেন স্পাইডার, কিডনি গার্ডেন
স্পাইডার, টেন্ট ওয়েব স্পাইডার বা গম্বুজ তাঁতি, ডার্ক উলফ স্পাইডার, উলফ স্পাইডার, ইয়েলো স্যাক স্পাইডার, ব্যান্ডেড ফিন্টেলা জাম্পিং স্পাইডার, জোলি জাম্পিং স্পাইডার , পিঁপড়ার নকল মাকড়সা, ফাইটিং স্পাইডার, প্যানট্রপিকাল জাম্পিং স্পাইডার, সবুজ কাঁকড়া মাকড়সা,সিলভার অরব স্পাইডার, অর্চার্ড স্পাইডার বা আলংকারিক সিলভার অরব স্পাইডার, কমন হাউস স্পাইডার,
ক্র্যাব স্পাইডার বা বাদামী ফুলের মাকড়সার দেখা পাওয়া যায়। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রজাপতি। কমন ইজেবেল হরতনি, রেডবেস ইজেবেল লোপামুদ্রা, টাউনি কস্টার হরিনছড়া, সাধারণ চিতা চিতা, গ্রে প্যানসি চাঁদনি, সাধারণ জেস্টার পিপুল্কাটি, ময়ূর প্যান্সি নয়ন, ডোরাকাটা বাঘ বাঘবল্লা, নীল বাঘ, চেস্টনাট বাঘ হিট্মউল, সাধারণ অভিবাসীপায়রাচালি, সাধারণ পিয়েরট তিলিয়া, লাল পিয়েরট সাজুন্তি প্রজাতির প্রজাপতি দেখার সুযোগ মিলতে পারে এখানে। অন্যদিকে রয়েছে ছত্রাক, ফার্ন এবং অর্কিড আর ওষুধি গাছ ও লাখ লাখ বিভিন্ন প্রজাতির পোকামাকড়।
এই অভয়ারণ্যের প্রবেশমূল্য মাথাপিছু ৫০ টাকা। বছরের যেকোনও সময়ে যেতে পারেন। শীতের সময়ে সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে এবং গ্রীষ্মকালে খোলা থাকে সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। শিয়ালদহ-সোনারপুর লাইনে শিয়ালদহ থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে নরেন্দ্রপুর স্টেশনের কাছেই চিন্তামনি কর বার্ড স্যাংচুয়ারি। মেট্রোরেলে কবি নজরুল স্টেশনে নেমে অটোতে রথতলা মোড়ে নামুন। রথতলা থেকে কাছেই এই পাখির অভয়ারণ্য।