ওয়েব ডেস্ক ঃ বাঙালি মাত্রেই ভ্রমণ পাগল। ছুটির দিনে সুযোগ পেলেই যারা বেরিয়ে পড়েন, তাঁরা সারা সপ্তাহের ক্লান্তিকে ধুয়েমুছে ফেলতে ঘুরে আসুন হালিশহরে।রামপ্রসাদি সুরের আবেশে ঘুরে বেড়ান, মন শান্ত হবে। দেখবেন,কাজের শুরুর দিনে অফিস করতে আর কষ্ট হবে না। তাই কলকাতার কাছে হালিশহরে পরিবার নিয়ে বা বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে আসুন। কলকাতা শহর থেকে রেল বা সড়ক পথে প্রায় দুঘণ্টায় পৌঁছে যাওয়া যায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রাচীন জনপদ হালিশহরে।ঐতিহাসিক এই স্থানটি গঙ্গার পাড়ে।প্রসঙ্গত, এই অঞ্চলের নাম হালিশহর হয়েছে মুঘল আমলের ‘হাভেলি কা সাহার’ থেকে। কারণ, মুঘল আমলে এই অঞ্চল প্রাসাদের শহর অর্থাৎ ‘হাভেলি কা সাহার’ হিসেবে বিখ্যাত ছিল।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় এই হাভেলির চিহ্ন আর এখন সেভাবে কিছুই নেই। তবে ভগ্নপ্রায় কয়েকটি টেরাকোটার মন্দির এখনও রয়েছে। উল্লেখ্য, কালীসাধক রামপ্রসাদ ও দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা রানী রাসমনির জন্মস্থান এই হালিশহর। হালিশহরে রামপ্রসাদের ভিটেয় তাঁর আরাধ্যা কালীমায়ের মন্দির রয়েছে।রয়েছে রামপ্রসাদের শোওয়ার ঘর। ওই ঘর এখন সংগ্রহশালা করা হয়েছে। সেখানে মন্দিরের নানান ইতিহাস সংরক্ষণ করা আছে। ইতিহাস বিখ্যাত শ্যামাসংগীত রচয়িতা রামপ্রসাদ সেন এক সময় মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের রাজ সভার গীতিকার ছিলেন।
এছাড়াও হালিশহরে গঙ্গার পাড়ে রয়েছে বলিদাঘাটা সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির । জানা গিয়েছে, এই মন্দিরের মা কালীর বিগ্রহ ছিল কোষ্ঠী পাথরের। ষাটের দশকে সেই মূর্তি চুরি হয়ে যায়। পরে ১৯৯৮ সালে এই মূর্তি তৈরি করা হয় । যদিও মা কালীর আদি মূর্তির (কোষ্ঠী পাথরের) চরণ দুটি আজও রয়েছে। পাশাপাশি হালিশহরে এসে নন্দ কুমারের মন্দির, জোড়া শিব মন্দির, বুড়ো শিব মন্দির দেখতে ভুলবেন না।
কলকাতা থেকে বিটি রোড হয়ে সড়কপথে হালিশহর যেতে পারেন, অথবা রেলপথে শিয়ালদহ থেকে কল্যাণী, শান্তিপুর, রাণাঘাট, কৃষ্ণনগরগামী ট্রেনে উঠে হালিশহর ষ্টেশনে নামুন।সেখান থেকে টোটো, অটো বা রিক্সা করে মনের আনন্দে দিনভর বেড়িয়ে নিন। ভালো লাগবে। শান্ত হবে মন।