ডেস্ক- একসময় দস্যু ও চোরাচালানকারী বীরাপ্পন ছিল আতঙ্ক। তামিলনাড়ুর রবিন হুড হয়ে উঠেছিল বীরাপ্পান।তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। বীরাপ্পানকে ধরার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচও করে সরকার। আর এখন সরকার তার গল্প বিক্রি করে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করছে।সরকারের এই উদ্যোগ সফল হবে না ফ্লপ করবে তা সময়ই বলে দেবে। এরমধ্যেই বন বিভাগ বীরাপ্পানের প্রাক্তন আস্তানা গোপীনাথম-এ একটি সাফারি শুরু করার পরিকল্পনা করছে। এই এলাকায় যখন বীরাপ্পানের দলবল সক্রিয় ছিল, তখন সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, পুলিশও এসব জায়গায় যাতায়াত করতে ভয় পেত। তখন এই অঞ্চলে ঢুকত একমাত্র বনকর্মীরা বা এসটিএফ (বীরাপ্পনকে গ্রেপ্তারের জন্য গঠিত বিশেষ টাস্ক ফোর্স) কর্মীরা। চিরুনি অভিযান করত তারা। বীরাপ্পান মারা যাওয়ার পর সেই জায়গাগুলো ঘুরে দেখার জন্য মানুষের মধ্যে কৌতূহল দেখা দিয়েছে বলে খবর।
সেদিকে লক্ষ্য রেখে গোপীনাথমে একটি জঙ্গল লজ এবং রিসর্টস মিস্ট্রি ট্রেইল ক্যাম্প করে সরকার। যেসব পর্যটক ক্যাম্পে থাকেন, তাদের ট্রেইলের চারপাশে ভ্রমণ করার অনুমতি দেওয়া হয়। এখন এই এলাকায় সাধারণ মানুষকে সাফারি উপভোগ করতে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে বন বিভাগ।মাইসুরু সার্কেলের প্রধান বন সংরক্ষক ড, মালতী প্রিয়া এম জানিয়েছে যে, তারা গোপীনাথমে একটি সাফারি চালুর পরিকল্পনা করছেন। এর ফলে বীরাপ্পানের দুর্গ ঘুরে দেখার জন্য জনসাধারণকে অনুমতি দেওয়া যাবে। তিনি জানান, তারা এখনও এই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারেননি। শীঘ্রই কাবেরী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করবেন তারা এবং সাফারি ট্রেইল ও পর্যটকদের জন্য অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।
জানা গিয়েছে, বীরাপ্পনের প্রাক্তন দুর্গটিকে ইকো- ট্যুরিজম প্যাকেজের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ করতে চায় বন বিভাগ। বন বিভাগের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুর সীমান্তবর্তী মালে মহাদেশ্বরা পাহাড়ে (এমএম হিলস) বীরাপ্পানের গ্রাম গোপিনাথম-এ একটি ‘মিস্ট্রি ট্রেইল ক্যাম্প’ করা হয়। ক্যাম্পটি এমএম হিলস এবং হোগেনাক্কাল জলপ্রপাতের মধ্যে অবস্থিত ছিল।এককোটি তিন লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় এই ক্যাম্প।পাখি পর্যবেক্ষক,বন্যপ্রাণ নিয়ে উতসাহী মানুষজন,ফটোগ্রাফার ও ট্রেকিং-এ আগ্রহীদের আকৃষ্ট করার জন্য গোপিনাথনে সরকারি মালিকানাধীন জঙ্গল লজস অ্যান্ড রিসর্টস (জেএলআর)তৈরি করা হয়। কিন্তু সাড়া তেমন মেলেনি।তাই এই প্রকল্প বন্ধ করতে হয়।
যদিও বন বিভাগ ইগলু-সদৃশ তাঁবু, যেকোনও তাপমাত্রা সহ্য করতে সক্ষম এস্কিমোদের কুঁড়েঘরের মতো ঘর, ঘন পর্ণমোচী বন এবং ঝোপঝাড়ের মধ্যেই তৈরি করেছিল ওই ক্যাম্প। জলক্রীড়ার ব্যবস্থাও রেখেছিল। সেখানে কোরাকল রাইডিং, কায়াকিং, মাউন্টেন বাইকিং, পাখি দেখা-সহ পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে আরও অনেক কিছু করেছিল বন বিভাগ। এখন
বীরাপ্পানের দুর্গকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য চিন্তাভাবনা করছে।অন্যদিকে পরিবেশকর্মীরা এই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেছে। পরিবেশকর্মীদের দাবি, কাবেরী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা উচিত নয়। কারণ, এর ফলে এই অঞ্চলের মূল্যবান উদ্ভিদ এবং প্রাণী জগতের ক্ষতি হবে।